মরচে ধরা রহস্য-দ্বিতীয় পর্ব

শান্তনু দাস
0 রেটিং
1504 পাঠক
রেটিং দিন
[মোট : 0 , গড়ে : 0]

পাঠকদের পছন্দ

বিগত পর্বের লিংক :
https://www.saabdik.com/morche-dhora-rohosyo-part1/

( ২ )

গুপ্তধন সংকেত

“ অদৃশ্য হয়ে গেল ? স্ট্রেঞ্জ ! ” … অবাক দৃষ্টিতে এক অভিনব কায়দায় ইন্দ্রদা কথাটা বলল ।

সত্যিই অবাক হবারই কথা । আগন্তুক যেরকম বর্ণনা দিচ্ছেন তাতে অবাক না হওয়াটাই বেমানান । আগন্তুকের নাম বিপিন চ্যাটার্জি , বয়স কুড়ি বাইশের মত , পোশাক পরিচ্ছদে আভিজাত্য স্পষ্ট , পরনে নীল শার্ট আর রেমন্ড কোম্পানির ছাই কালারের প্যান্ট , বুক পকেট থেকে দামি ফাউন্টেন পেন উঁকি মারছে , চোখদুটো ঢুলুঢুলু আর মুখে আশঙ্কার ভাব সুস্পষ্ট ।

ঘরে এখন আমি , বিপিন চ্যাটার্জি এবং ইন্দ্রদা মানে ডিটেকটিভ ইন্দ্রজিৎ সান্যাল । বিপিন চ্যাটার্জির বর্ণনা অনুযায়ী কাল রাতে উনি ডায়মন্ড কোম্পানি থেকে কাজ করে নিজের স্কর্পিও করে নিজেই ড্রাইভ করে বাড়ি ফিরছিলেন । সল্টলেকের মেন রোড তখন অনেকটা শান্ত , লোকসংখ্যা কম , রাত প্রায় সাড়ে বারোটা তখন । ঘরের কাছাকাছি আসতেই গাড়ির ভেতর থেকে উনি লক্ষ্য করেন ওনার বাবা সোমনীল চ্যাটার্জি বাগানের সিমেন্ট বাঁধানো রাস্তায় লুটিয়ে পড়ে আছেন । পাশে এক নারীমূর্তি দাঁড়িয়ে , গায়ে কালো কোট , মাথায় কালো টুপি । উনি পকেট থেকে রিভলবার বের করে ‘ কে ওখানে ? কে ওখানে ? ’ বলে চিৎকার করতে থাকেন । নিমেষের মধ্যে ওই নারী ছুটতে শুরু করে আর অন্ধকারে মিলিয়ে যায় । বিপিনবাবু গাড়ি থেকে নেমে চারিদিক খুঁজেও কাউকে পান না । তারপর বিদ্যুতের মত ঘটে যায় আরো একটা ঘটনা । বিপিনবাবু তখন আধবসা অবস্থায় এক হাত দিয়ে বাবার পালস রেট চেক করছেন , অন্য হাতে রয়েছে উদ্যত রিভলবার । পেছন থেকে একটা গুলি এসে আচমকা বিপিনবাবুর রিভলবারটা ছিটকে দেয় । পিছনে তাকিয়ে দেখেন ওনার গাড়িটা নিয়ে ওই নারীমূর্তি মেনরোড ধরে পালিয়ে যাচ্ছে । এরপর প্রতিবেশীদের সাহায্যে বাবা সোমনীল চ্যাটার্জিকে নার্সিং হোমে নিয়ে যান উনি ।

ঘরের মধ্যে তিনজনকে চমকে দিয়ে দেওয়াল ঘড়িটা নিত্যকার নিয়মের মত সকাল সাতটার সাতটা ঘন্টা বাজিয়ে দিল । ইন্দ্রদা ওর কাঠের ছাইদানে প্রথম ধরানো গোল্ড ফ্লেক এর লম্বা ছাইটা ফেলে বিপিনবাবুর উদ্দেশ্যে বলল …

“ আচ্ছা বিপিনবাবু , আপনি বলছেন আপনি যখন ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন তখন সাড়ে বারোটা বাজছিল । বাট আই থিঙ্ক ইউ আর রং , নয়তো মিথ্যে বলছেন । ”

“ সঠিক টাইমটা জানি না । তবে বিশ্বাস করুন আ … আমি …”

“ সঠিক টাইমটা ছিল একটা বেজে পনেরো মিনিট । অবাক হবার কিছুই নেই । আপনার রিস্ট ওয়াচটা দেখুন ঠিক একটা পনেরোতে বন্ধ হয়েছে । আর ওপরের কাঁচটা ভাঙা । ”

“ হ্যাঁ তাইতো খেয়ালই করিনি । কাল রাতে ওই নারীমূর্তি যখন গুলি ছোঁড়ে তখন আমার হাত থেকে রিভলবারটা ছিটকে যায় , হাতটা পড়ে সিমেন্ট বাঁধানো রাস্তার উপর । তখনই হয়তো ঘড়ির কাঁচটা ভেঙে থাকবে । আসলে ওই মোমেন্টে বাবা ছাড়া আর কারোর কথা মাথায় ছিল না । ”

“ বাই দা বাই , আমার কাছে আসার আগে নিশ্চয় পুলিশে রিপোর্ট করেছেন ? ”

“ হ্যাঁ ইন্সপেক্টর হাজরা এসেছিলেন । তবে ঘটনাস্থলে কতকগুলো পায়ের ছাপ ছাড়া আর কিছু পাওয়া যায়নি । ”

“ ইটস ওকে । আপনাদের ফ্যামিলি ডিটেলসটা … ”

“ ছোটবেলায় মাকে হারিয়েছি এক্সিডেন্টে । তারপর বাবা মায়ের অভাব বুঝতে দেয়নি আমাকে । এখন এক বন্ধুর সাহায্যে ওই ডায়মন্ড কোম্পানিতে জয়েন করেছি রিসেন্টলি । বেশিরভাগ দিন ফিরতে রাত হয় , মাঝে মাঝে নাইট শিফটও থাকে । বাড়িতে লোক বলতে আমি , বাবা , আর এক কাজের মেয়ে বাবার দেখাশোনার জন্য । অন্যান্য রিলেটিভসদের সঙ্গে তেমন যোগাযোগ নেই । ”

হঠাৎ একটা রিসেন্ট রিংটোনের সুরে বিপিনবাবুর মোবাইলটা বেজে উঠল । মনে হয় নার্সিংহোম থেকে ফোন এসেছে । আমরাও বিপিন চ্যাটার্জির সাথে নার্সিং হোম যাবার জন্য তৈরি হয়ে নিলাম ।

বাইপাস দিয়ে গাড়ি নার্সিংহোম যেতে আধঘন্টা লাগিয়ে দিল । কথায় কথায় জানতে পারলাম এই গাড়িটাই নিয়ে পালিয়ে যায় ওই মহিলা । সকালে চৌরাস্তার মোড়ে গাড়িটা পার্ক করা ছিল । লোকাল বুথের একটা নাম্বার থেকে অজানা একজন ফোন করে বিপিনবাবুকে জানিয়ে দেয় গাড়িটা ওখানে পার্ক করা আছে । আমি আর ইন্দ্রদা ডাক্তারবাবুর কাছে বসলাম । বিপিনবাবু বাবার কাছে গেলেন এক নার্সের সহায়তায় ।

ইন্দ্রদা ডাক্তারবাবুর উদ্দেশ্যে বললেন … “ পেশেন্ট এর ঠিক কি হয়েছে বলুন তো ? ”

“ইটস এ মিস্টিরিয়াস কেস । হঠাৎ কিছু একটা দেখে ভয় পেয়েছেন , সেখান থেকেই সেরিব্রাল ড্যামেজ , হার্টও ফল করছে মধ্যে মধ্যে । ”

“ কোনো পাস্ট মেমোরি কি ? ”

“ মে বি । তবে একটা আতঙ্ক ওনাকে এখনো গ্রাস করে আছে । অবস্থা খুব সিরিয়াস । আগে একবার হার্ট অ্যাটাক হয়েছে । ”

হঠাৎ একজন নার্স তড়িঘড়ি করে এসে বলল … “ প্লিজ ডক্টর , কাইন্ডলি একবার আসুন তাড়াতাড়ি । তেরো নম্বর রুমের পেশেন্ট এর অবস্থা খুব সংকটজনক । ”

তার মানে সোমনীলবাবুই । ডাক্তারের পারমিশন নিয়ে আমরাও গেলাম । দেখলাম বৃদ্ধ সোমনীলবাবু বেডে শুয়ে আছেন , পাশে ওনার ছেলে । ডাক্তারবাবু পালস রেট দেখে একপাশে গিয়ে দাঁড়ালেন । ইন্দ্রদাকে দেখলাম একদৃষ্টে সোমনীলবাবুর দিকে চেয়ে ওনার মুখের আধ জড়ানো কথাগুলো মন দিয়ে শুনছে ।

“ জুল আ … আমাকে খ … খ … ক্ষমা করো । আ … আ … আমি যা … যা … যাচ্ছি । ”

বিপিনবাবু প্রায় ডুকরে কেঁদে বলে উঠলেন … “ বাবা তুমি কিসব আবোল তাবোল বলছ ? কে কে জুল ? কার কথা বলছো তুমি ? তোমার কিছু হবে না বাবা । আমরা সবাই তোমার সাথে আছি । ”

“ বি … বি … বিপু , আ … আমার স … স … সম্পত্তি গু …গু … গুপ্তধন । ”

“ তুমি কি বলতে চাইছো বাবা ? ”

“ হা … হা … হার … হার … হা … হার … হার … ”

একবার প্রশান্তির নিঃশ্বাস ত্যাগ করে সোমনীলবাবুর চোখদুটো এবার স্থির হয়ে যায় । ওই অবস্থায় আমাদের ওখানে থাকাটা অবাঞ্ছনীয় । আমি আর ইন্দ্রদা তাই তেরো নম্বর রুমের পর্দাটা সরিয়ে বেরিয়ে আসি । একজন ঘোমটা দেওয়া মহিলা পর্দা থেকে কিছুটা দূরে সরে দাঁড়ায় । রুমাল দিয়ে মুখ মোছার ভান করে মনে হয় যেন মুখটাকে আত্মগোপন করার চেষ্টা করছে । আমরা একপলক দেখেই চলে আসি ।

সারাটা দিন ইন্দ্রদা গুম হয়েছিল । দুপুর তিনটে নাগাদ একটা ফোন আসার পর থেকে ইন্দ্রদাকে আরো বেশি গম্ভীর দেখাচ্ছে । লক্ষ্য করছিলাম মাঝে মাঝে ওর ভুরুটা সেকেন্ড ব্রিজ হয়ে যাচ্ছে । রাত নটার পরও যে আমাদের জন্য আরো কিছু ঘটনা অপেক্ষা করছে তা কল্পনা করা যায়নি ।

ইন্দ্রদার দৃষ্টি স্থির । টিপয়ে রাখা ছাইদানে সিগারেট এর ছাই ঝাড়ে ও । সিগারেটের ধোঁয়ায় ভরে যায় টেবিলল্যাম্পের সামনেটা । ধোঁয়া সরে যেতেই আমার মুখের দিকে তাকিয়ে থাকে ও , তাকিয়েই থাকে । আমিও নিশ্চুপ হয়ে ওর মুখের আকিবুঁকিগুলো জরিপ করতে থাকি । আমি পাশে গিয়ে বসতেই টেবিলল্যাম্পের সুইচটা একবার অফ একবার অন করতে করতে ইন্দ্রদা বলতে থাকে …

“ জানিস তো সমু , রহস্যের আলোটা চোখের সামনে জ্বলছে আর নিভছে । সোমনীলবাবুর ডাইং ওয়ার্ডগুলো বেশ মিস্টিরিয়াস । গুপ্তধন , সম্পত্তি , ক্ষমাপ্রার্থনা এন্ড আবাভ অল হু ইজ জুল ? ”

“ হুম ইন্দ্রদা , বেশ রহস্যজনক … আচ্ছা সকালে কে তোমাকে ফোন করেছিল ? ”

“ বিপিন চ্যাটার্জির বন্ধু , লেকটাউন থেকে । বিপিনবাবু কয়েকদিন ওনার বন্ধুর বাড়িতেই থাকবেন । এই অবস্থায় ওনার মনের অবস্থাটা নিশ্চয় বুঝতে পারছিস । আর একটা ঘটনা , আজ দুপুরে বিপিনবাবুর বাড়িতে তালা ভেঙে চোর ঢুকেছিল । কিন্তু রহস্য আরো ঘোরালো হয়ে যাচ্ছে কারণ চোর ঘরের একটা জিনিসও ওলোটপালোট করেনি । তবে কি নিতে এসেছিল চোর ? ”

“ কিন্তু ওনার বন্ধু খবর পেলেন কিভাবে ? ”

“ আড়াইটা নাগাদ বিপিনবাবুর কাজের মেয়ে এসে দেখেছে ঘর খোলা আর তালা ভাঙা । বিপিনবাবুর কথা অনুযায়ীই অবশ্য আমাকে ইনফর্ম করা হয়েছে । ”

“ আচ্ছা ইন্দ্রদা একটা কথা বলব ? ”

“ বল । ”

“ একজন সাধারণ মানুষ কি সব সময় পকেটে রিভলবার নিয়ে ঘোরে ? এমনকি তুমিও না । কিন্তু বিপিনবাবু সে রাত্রে রিভলবার পেলেন কোথায় ? ”

“ হয়তো রাত করে ফিরতেন বলে রিভলবার সঙ্গে রাখতেন । লাইসেন্স থাকলে রাখাটা অস্বাভাবিক নয় … ”

“ রিভলবার ইজ হেয়ার । হ্যান্ডস আপ মিস্টার ইন্দ্রজিৎ সান্যাল এন্ড ইউ … ”

ইন্দ্রদা আরো কিছু বলতে যাচ্ছিল কিন্তু আমাদের অবাক করে দিয়ে এক মহিলা তীক্ষ্ণ স্বরে কথাগুলো বলল । এবার দেখলাম আমাদের ঘরের দরজার পর্দাটা সরিয়ে আমাদের দিকে রিভলবার নিশানা করে এগিয়ে আসছে এক তরুণী । চোখ দুটোর মাঝে নীলাভ মণি দুটি জ্বলজ্বল করছে , চুলগুলো ব্রাউন করা , পরনে স্কিন ফিটিং জিন্স আর হলুদ ডেনিম টপ , ওপরে ব্ল্যাক কোট , কাঁধে একটা ভ্যানিটি ব্যাগ , গলায় চকচক করছে একটা দামি পাথরের হার । বাইরের নৃশংসতা নিরীহ শান্ত মুখটার সঙ্গে বড়ই বেমানান ।

আমি চিৎকার করে উঠলাম … “ কে আপনি ? ” ততক্ষনে রিভলবারের নল আমার কপাল স্পর্শ করে গেছে ।

ইন্দ্রদার বজ্রগম্ভীর স্বর … “ হোয়াট ডু ইউ ওয়ান্ট ? ”

“ নাথিং স্পেশাল । কিন্তু আমার কাজটা না করে দিলে ইউ উইল বি ইন বিগ ডেঞ্জার মিস্টার সান্যাল । আই ডোন্ট ওয়ান্ট ইওর হার্ম , আই এম … ”

“ মিস মার্টিনা ফ্রম আমেরিকা । অ্যাম আই রাইট ? ”

“ ইয়েস মার্টিনা ক্যাম্পবেল ফ্রম আমেরিকা , বাট … ”

“ নিড নট টু বি অ্যাসটোনিসড । আমি একজন প্রাইভেট ডিটেকটিভ , অফকোর্স অ্যান ইন্ডিয়ান । নিখুঁত দৃষ্টিশক্তি আর পর্যবেক্ষণ ক্ষমতা থাকলে সবকিছুই জানা সম্ভব । আর বুদ্ধির জোরে আপনার মত শয়তানদের শায়েস্তা করতে আমার … ”

“ হেই মিস্টার … আর একটা কথা বললে আপনাদের দুজনের বুক ঝাঁঝরা করে ওই ইন্ডিয়ার নোংরা গঙ্গায় ভাসিয়ে দেবো । নাউ কেয়ারফুলি লিসন টু মি । ”

মেয়েটি সাইডব্যাগ থেকে একটি কাগজ বের করল , কিছু লেখা আছে বোধহয় । বের করার সময় একটা প্যাডের মত ডায়রি মেঝেতে পড়ে গেল । তখনও আমার কপালে রিভলবার ঠেকানো । ইন্দ্রদাকেই অর্ডার করা হল ডায়রিটা তুলতে । কোনোরকম চালাকির চেষ্টা না করে মেঝে থেকে ডায়রিটা তুলে ইন্দ্রদা মার্টিনার হাতে দিল । ভাঁজ করা একটা কাগজ ইন্দ্রদার হাতে দিল মেয়েটি । তাতে গোটা গোটা অক্ষরে বাংলায় লেখা ছিল একটা ছড়া …

“ গাধারে মেরে দাদা

সংকেত নিয়ে যান ,

পাবেন তো দেখুন

গুপ্তধনের সন্ধান ।

কালো সাদা রঙের এটি

ভেবে দেখুন পরে ,

কান টানলে আওয়াজ করে

খুব জোরে জোরে । ”

“ ইটস এ সাইন অফ হিডেন ট্রেজার । ” … মেয়েটি ফুঁসলে বলে উঠল ।

মুখ দিয়ে নিজের অজান্তেই অস্ফুটে একটা কথা বেরিয়ে এল আমার … “ গুপ্তধন ! ”

ইন্দ্রদার ঠোঁটে আলতো হাসি । সে মার্টিনার দিকে আঙ্গুল দেখিয়ে বলল … “ সো ইউ আর দা লেডি … সোমনীলবাবুকে আপনিই ভয় দেখাতে গিয়েছিলেন , আর আজ দুপুরে আপনিই চোর সেজে সোমনীলবাবুর ঘরে গিয়েছিলেন গুপ্তধনের সন্ধানে , আজ সকালে নার্সিং হোমের পর্দার আড়ালে মাথায় ঘোমটা দিয়ে আত্মগোপন করে শুনছিলেন আপনিই , আর গুপ্তধনের ছকটার সমাধান করে দিতে পারলে আমি হব বিপদমুক্ত , তাই তো ? ”

“ আপনি কত সহজে সব বুঝে যান । থ্যাঙ্কস ফর নট এক্সপেনসিং মাই ক্যালোরি । মাইন্ড ইট , ইওর ফিউচার ডিপেন্ডস অন ইট । সংকেতটা আপনার কাছে থাকলো , চালাকির চেষ্টা করলে ফল হবে মারাত্মক । ফার্স্ট টাইম আই আওয়ের ইউ , অ্যান্ড দিস ইজ ইওর লাস্ট টাইম অলসো । ” … মার্টিনা ঝাঁঝিয়ে ওঠে ।

“ আর গুপ্তধনের হদিস পাওয়া গেলে আমার প্রফিট ? ” … ইন্দ্রদার নার্ভ তখনও দুর্বল হয়নি ।

“ আপনি পারেনও মিস্টার ইন্দ্রজিৎ সান্যাল । ঈশপের গল্প পড়েছেন ? এক বাঘের গলায় কাঁটা বিঁধে গেছিল । বের করতে সাহায্য করেছিল এক নিরীহ সারস । বোকা সারস তার কাজের পুরস্কার চেয়েছিল । দেন হোয়াট মিস্টার সান্যাল ? … আপনি বোধহয় ভুলে যাচ্ছেন আই অ্যাম নট হেয়ার টু এক্সপ্লেন ইউ এনি কিডস স্টোরি , অ্যান্ড দিস ইজ নট এ টয় রিভলবার । আই ওয়ান্ট দা ট্রেজার অ্যাট এনি কস্ট । ” … ধারালো কথাগুলো বলতে বলতে দরজা দিয়ে বেরিয়ে গেল মিস মার্টিনা ক্যাম্পবেল ।

ইন্দ্রদা তখনও মার্টিনার গমনপথের দিকে চেয়ে স্থির হয়ে দাঁড়িয়ে । টেবিলের ওপর রাখা একগ্লাস জল ঢকঢক করে খেতে খেতে ইন্দ্রদার গলা কানে এল ….

“ ফোর ফাইভ নাইন নাইন জিরো ফোর টু , নাম্বারটা নোট করে রাখতো সৌম্য । ” … ইন্দ্রদার দৃষ্টি স্থির সামনের দিকে ।

“ এটা আবার কার নম্বর ? ”

“ যা বলছি কর না । ”

আমি ডায়রিতে নম্বরটা নোট করতে করতে ইন্দ্রদাকে জিজ্ঞেস করলাম … “ তুমি কি করে মেয়েটার নাম জানলে বলোতো ইন্দ্রদা ? ”

“ মিস মার্টিনার ডান হাতের তর্জনীতে যে আংটিটা ছিল লক্ষ্য করিসনি ? তাতে স্পষ্ট মার্টিনা নামটা লেখা ছিল ।  আর ভ্যানিটি ব্যাগের ওপর স্টিলের পাতে লেখা ছিল ‘ আমেরিকান স্টাইল , পিম্পটন স্ট্রিট ’ এরপরও কি অবাক হবার কিছু আছে ? ”

“ না অবাক হচ্ছি তোমার আর আমার দৃষ্টিশক্তির পার্থক্য দেখে । যাইহোক এই কাগজের ছড়াটা ভুয়ো নয়তো ইন্দ্রদা ? ”

“ তাহলে মার্টিনা ক্যাম্পবেল আসবেই বা কেন ? ”

“ হুম । কিন্তু আমেরিকা থেকে ভারতে আসার উদ্দেশ্যটা কি ? ”

“ তাছাড়া সোমনীলবাবুর সঙ্গে এই মার্টিনার সম্পর্ক কি সেটাও একটা বড় প্রশ্ন সৌম্য ? ”

“ ইন্দ্রদা তুমি মার্টিনার গলার হারটা লক্ষ্য করলে ? ”

“ কেন বলতো সৌম্য ? ”

“ না , থাক । ”

(ক্রমশঃ)

আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন:

রেটিং ও কমেন্টস জন্য

নতুন প্রকাশিত

হোম
শ্রেণী
লিখুন
প্রোফাইল