কর্মজীবী পুরুষদের জন্য লাইফস্টাইল

শাব্দিক প্রতিবেদন
0 রেটিং
555 পাঠক
রেটিং দিন
[মোট : 0 , গড়ে : 0]

পাঠকদের পছন্দ

আমাদের চারপাশে লক্ষ্য করলে এরকম দৃশ্য খুব কমই দেখা যায় যে ,একটি ছেলে আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে তার মূল্যবান সময় নষ্ট করছে রূপচর্চা করে। আবার এরই মাঝে দু চারজন যারা এ ব্যাপারে একটু ওয়াকিবহাল তাদের দেখে অনেকেই বাঁকা চোখে ,মুচকি হাসিও হেসেছে।অনেকের কাছেই রূপচর্চা মানেই নিজেকে সুন্দর দেখাবার চেষ্টা।অতএব ছেলেদের এই ক্ষেত্রে কোনো ধরনের প্রবেশ ই যেন নিষিদ্ধ এই জগতে।এসব প্রাগৈতিহাসিক যুগের ধ্যান ধারণাকে উড়িয়ে দিয়েছে এই বাস্তব,যে রূপচর্চার সাথে সুন্দর হওয়ার থেকেও গুরুত্বপূর্ণ যে কারণ তা হলো, আমাদের নিজেদের যত্ন নেওয়া।

শরীরের নানান অঙ্গগুলোর যত্নের সাথে সাথে ত্বক এর যত্ন ও সমানভাবে প্রয়োজন।আমাদের বাইরের এই দূষিত পরিবেশের অনেক অনেক ঝড়ঝাপ্টাই মুখ বুজে সহ্য করে আমাদের এই ত্বক।তাই এটিকে বাদ দিয়ে বা গুরুত্ব না দিয়ে অবহেলা করলে ফল আমাদের ই ভোগ করতে হবে। অতএব অবহেলা না করে এখনই শুরু করে দিতে হবে ত্বকের যত্ন নারী পুরুষ নির্বিশেষে।বিশেষ করে তাদের যারা প্রায় প্রতিদিনই বাইরে বেরোন।

অনেকে মনে করেন রুপচর্চা ও পরিপাটি সাজগোজ শুধু মেয়েদের জন্যই প্রযোজ্য। ফলে, পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতাসহ শরীরের নিয়মিত যত্ন নেওয়া বা সাজানো গোছানো চলাফেরার ব্যাপারে অনেক পুরুষেরাই উদাসীন।আর যুগ যুগ ধরে তাই চলে আসছে।

কিন্তু সত্যিকার অর্থে বেশ কিছু ক্ষেত্রে নারীদের থেকে বরং পুরুষদেরই আরও অনেক বেশি যত্নবান হওয়া প্রয়োজন। কারণ তাদেরকেই ঘরের বাইরে ঘোরাফেরা করতে হয় তুলনামূলকভাবে বেশি। তাই ত্বকে রোদ-বৃষ্টিসহ রাস্তার ধুলাবালি আর নানা ধরনের রোগ-জীবাণুর সরাসরি সংস্পর্শের ক্ষতিকর প্রভাবটা পুরুষদের ওপরেই পড়ে বেশি।

এমনটি ভাবার কোনো কারণ নেই যে, টিভি মডেল বা ফ্যাশন তারকাদেরই শুধু দেখতে সুন্দর হতে হবে।এর একটা দিক হলো সুন্দর দেখানো কিন্তু অন্য দিক হলো নিজের শরীরের যত্ন। সব পেশার ক্ষেত্রেই দেখতে সুন্দর, গোছানো ও কাজকর্মে পরিপাটি হওয়াটা একটা বাড়তি গুণ হিসেবে কাজ করে। আপনার মার্জিত চলাফেরা ও কাজকর্মের কারণে হয়তো একটু তাড়াতাড়িই হয়ে যেতে পারে আপনার পেশায় কাঙ্ক্ষিত পদোন্নতি।

এখানে পেশাদারি মনোভাব বৃদ্ধিতে সহায়ক কিছু টিপস দেয়া হলো:

 • সকালে একটু আগেভাগেই ঘুম থেকে ওঠার অভ্যাস করুন। মনও যেমন ফুরফুরে থাকবে, আর সময়মতো কর্মক্ষেত্রে পৌঁছে কাজে মন দেওয়াটাও সহজ হবে

• যারা সারাদিন অফিসে বা কর্মক্ষেত্রে থাকেন তাদের সকালে স্নান  করে বের হওয়া ভালো। এতে আপনাকে সতেজ ও প্রাণবন্ত লাগবে, কাজের প্রতিও আগ্রহ বাড়বে,

• অফিস থেকে ফিরে আবার স্নান করে নিতে পারেন।সারাদিনে শরীরে জমা ময়লা আর ক্লান্তি দুইই দূর হয়ে, ঘুমটাও অনেক ভালো হবে।

• প্রতিদিন সাবান দিয়ে স্নান করার অভ্যাস করুন। সুগন্ধি সাবান বাদ দিয়ে ডেটল জাতীয় সাবান ব্যবহার করা ভালো। এগুলো রোগজীবাণু প্রতিরোধে বেশি কার্যকর।

• পরের দিন কী কী কাজ করবেন বা কার কার সাথে কখন দেখা করবেন তা আগের দিন রাতে ঘুমানোর আগেই পরিকল্পনা করে রাখুন। মনে না থাকার সম্ভাবনা থাকলে ডায়েরি, মোবাইল বা নির্দিষ্ট কোথাও নোট করে রাখতে পারেন। এতে পরের দিন পরিকল্পনামাফিক কাজ করা সহজ হবে।

• বেশি রাত জাগার অভ্যাস থাকলে তা ত্যাগ করার চেষ্টা করুন। এতে সকালের ঘুম ভাঙতে দেরি ও কষ্ট হয়, কাজেরও ক্ষতি হয়। বেশি দেরি করে ঘুম থেকে উঠলে আপনার সারাদিনের পরিকল্পনাটাই এলোমেলো হয়ে যেতে পারে। এছাড়া রাত জাগাটা স্বাস্থ্যের জন্যও ক্ষতিকর

• কর্মক্ষেত্রের একাধিক পোশাক রাখুন। এক পোশাক বারবার না পরে একদিন পরার পরই ধুয়ে ফেলুন। সবসময় ধোয়া এবং আয়রন করা কাপড় পড়ার চেষ্টা করবেন। পোশাক ঘুরিয়ে ফিরিয়ে পড়ুন।

• ঘামের দুর্গন্ধে জেনো আপনার পাশের লোকটির কষ্ট না হয় সেদিকে খেয়াল রাখুন। প্রয়োজনে ডিওডোরেন্ট ব্যবহার করতে পারেন।

• সুগন্ধী অর্থাৎ পারফিউম বা বডি স্প্রে ব্যবহার করতে পারেন। তবে অবশ্যই তা যেন খুব হালকা গন্ধের হয়

• এক থেকে তিন দিন পরপর চুলে শ্যাম্পু করুন। শ্যাম্পু করার পর চুল শুকিয়ে তাতে হেয়ার ক্রীম, জেল বা হার্বাল অয়েল দিতে পারেন। এতে চুলের সৌন্দর্য বাড়বে।

• রোদের হাত থেকে রক্ষার জন্য সানস্ক্রীন সমৃদ্ধ জেন্টস ক্রীম ব্যবহার করতে পারেন।

• অনেকের সারা বছরই ঠোঁট ফাটে। তারা লিপজেল সঙ্গে রাখুন

• ত্বকের বাড়তি যত্ন নিতে জেন্টস্ উপটান ব্যবহার করুন।জেন্টস্ পার্লার থেকে মাসে একবার ফেসিয়ালও করাতে পারেন।

• বাইরের ধুলাবালির কারণে অনেকের শ্বাস কষ্ট হয়। সেক্ষেত্রে মুখে মাস্ক ব্যবহার করলে অনেকটা রেহাই পাওয়া যায়। রুমালও ব্যবহার করা যেতে পারে।

• সবসময় সঙ্গে রুমাল ও টিস্যু পেপার রাখুন।

• বাসে বা পথে ঘাটে চলার ক্ষেত্রে মাথায় ক্যাপ পড়লে বাইরের ধুলাবালি থেকে চুল বাঁচানো যায়

• বাইরে রোদ ও ধুলাবালি এড়াতে ব্যক্তিত্ব ও পোশাকের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ রোদচশমা ব্যবহার করুন।

• জুতা মোছার জন্য আলাদা একটি ছোট্ট রুমাল রাখতে পারেন।

• সময়ানুবর্তিতা ঠিক রাখার জন্য সঙ্গে অবশ্যই একটি ঘড়ি রাখুন। ভালো ব্র্যান্ডের রুচিসম্মত হাতঘড়ি ব্যবহার করাই ভালো এতে চলতে ফিরতে বা কর্মক্ষেত্রে আপনার সুন্দর রুচির পরিচয় ফুটে উঠবে।

• যেসব অফিসের ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট করে দেয়া কোনো পোশাক নেই সেসব ক্ষেত্রে জাঁকালো বা চোখ ধাঁধানো পোশাক পরিহার করে মার্জিত ও ভদ্র পোশাক পরুন।

• বড় চুল বা ঝুটি, গলায় চেইন, হাতে আংটি, এগুলো সাধারণত পেশাদারিত্ব ক্ষুন্ন করে।

• অনেকের মুখে দুর্গন্ধ হয়। এতে আশে পাশের লোকজনেরও সমস্যা হয়। এরকম হয়ে থাকলে সমস্যাটাকে এড়িয়ে না গিয়ে নিয়মিত মাউথওয়াশ ব্যবহার করুন।বাসা থেকে বের হবার আগে মাউথওয়াশ দিয়ে ভালোভাবে কুলি করে নিলে ভালো কাজ হয়।তবে বিভিন্ন কারণে মুখে দুর্গন্ধ হতে পারে। নির্দিষ্ট কিছু রোগের কারণেও মুখে দুর্গন্ধ হতে পারে। তৎক্ষণাৎ কাজের জন্য মাউথ স্প্ৰে ব্যবহার করুন তবে মাউথওয়াশ ব্যবহারের পরেও কাজ না হলে ডাক্তারের পরামর্শ নিন।

• অনেক সময় মোজা না ধোয়ার ফলে দুর্গন্ধ হয়। মোজা নিয়মিত ধুয়ে ব্যবহার করুন

• নিয়মিত চুল ও নখ কেটে ছোট রাখবেন।

• গ্যাস্ট্রিক, এলার্জি, হাঁপানি ইত্যাদি রোগ থাকলে প্রয়োজনীয় ওষুধপত্র সাথেই রাখুন। কারণ প্রয়োজনের সময় হাতের কাছে এসব নাও থাকতে পারে

অফিসে যাওয়ার সময় গাড়ি রাস্তায় জ্যামে আটকে থাকলে বিরক্ত না হয়ে এই সময়টায় বাসে বা গাড়িতে বসে সকালের পত্রিকাটা পড়তে পারেন। মোবাইলে নেট থাকলে ইন্টারনেটে নিউজের তাঁজা খবরগুলো পড়ে নিতে পারেন। এতে সময়টা অপচয় হলো না আর আপনিও আপডেট হয়ে গেলেন। বা কোনো পড়ে থাকা কাজ ও সেরে নিতে পারেন।

আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন:

রেটিং ও কমেন্টস জন্য

নতুন প্রকাশিত

হোম
শ্রেণী
লিখুন
প্রোফাইল