😅 কেল্টুর জন্মাষ্টমীর রচনা 😅

অর্পণ (শঙ্খচিল) ভট্টাচার্য্য
4.5 রেটিং
1649 পাঠক
রেটিং দিন
[মোট : 4 , গড়ে : 4.5]

পাঠকদের পছন্দ

কেল্টু কোশ্চেন পেপার হাতে নিয়ে কলম মুখে দিয়ে কিছুক্ষণ ভাবলো, তারপর মাথা চুলকিয়ে শুরু করলো লেখা।:কোশ্চেনটা কমন পড়েনি স্যার। তাই রচনাটা তেমন ভাল হবেনা স্যার! আসলে কী হয়েছে জানেন স্যার, আপনি যদি সরস্বতী পুজো নিয়ে রচনা দিতেন, আমি প্যান্ডেল, মাইক, অঞ্জলি, মাখামাখি দধিকর্মা সব একাকার করে দিতে পারতাম! 
ওই ভিজে ভিজে ডাল মাখা লুচি, বাঁধাকপি, বোঁদে, তার ওপর হলুদ শাড়ি পরা মেয়ে ইস্কুলের ডার্লিংরা,
এমনকি নমঃ নিত্যং মন্ত্র – এ সব নিয়ে জমিয়ে লিখে দিতাম I
দুর্গা পুজো দিলেও চলত! কিন্তু জন্মাষ্টমীর কোনও স্বাদ আমার জিভে নেই স্যার I যাক, জন্মাষ্টমীর বিষয়ে যা জানি তা লিখছি I:আগস্ট মাসে জন্মাষ্টমীর দিন শ্রীকৃষ্ণ, বোধহয় বড় দেবতা ছিলেন, তাঁর নিজের বংশে জন্ম নেন I কিন্তু তাঁর এক ভিলেন মামা, হেভি মিনিস্টার ফিনিস্টার হবে, নাম কংস, জ্যোতিষী করে জেনেছিলেন যে, এই ভাগনে তাঁকে দুনিয়া থেকে সাফ করে দেবে I তখন তিনি নিজের গুন্ডা নিয়ে আসেন তাঁকে মারতে I
কিন্তু আমাদের হিরো শিশুটিকে তার আগেই রাতারাতি পাচার করে দেওয়া হয়েছিল অন্য কারোর বাড়িতে! বোধ হয় নন্দী বা নন্দ কেউ হবেI সেখানে তার বউ যশোদার কাছে তিনি বড় হতে থাকেন I
ভিলেন কংস খালি হাতে ফিরে গেলে আনন্দে সবাই মিলে ঝুলন উৎসব করে I ছেলেবেলা থেকেই শ্রীকৃষ্ণ খুব চালু ছিলেন I রান্নাঘরে তিনি মায়ের ফ্রিজ থেকে আমুল মাখন চুরি করে এককোনে লুকিয়ে লুকিয়ে খেতেন I তার চেলারাও ভাগ পেত I ধরা পড়লে বলতেন ম্যায় নেহী মাখন খায়ো I কি বিচ্ছু ছেলেরে বাবা ! খেয়েছি কি খায়নি, কি বলছে বোঝার উপায় নেই I
যশোদার কাছে গাঁয়ের মেয়েরা প্রায়ই নালিশ জানাতো শ্রীকৃষ্ণর নামে! ছোটবেলা থেকেই মেয়েদের পেছনে লাগার স্বভাব ছিল তাঁর I
ইতিমধ্যে সেই শিশু নানান রকম মারপিটে জড়িয়ে পড়ে। ইস্কুল থেকে ড্রপ আউট হয়ে মাঠে গরু ফরু চরায় I তখন মিড-ডে মিল চালু ছিল না তো, ফলে ইস্কুলে যাবার ইন্টারেস্ট ও ছিলনা I শিশুটি ইতিমধ্যে বেশ কয়েকটা গুন্ডাদের ঠেঙিয়ে হেভি জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন! বিশেষ করে কালীয়া নামে একটি খতরনাক গুন্ডাকে লেকের জলে চুবিয়েছিলেন বলে এলাকার জনসাধারণ তাঁকে নিজেদের পাড়ার দাদা বানিয়ে দেয় I
সেকালেও দাদাগিরি ছিল স্যার I আপনি “শোলে” সিনেমা দেখেছেন নিশ্চই I মনে পড়ে গব্বর সিং এর দলেও কালিয়া নামে একটা ডাকাত ছিল I যাইহোক এই সময় খুব সম্ভবত তিনি ভুল করে একটা কাছিমও মেরেছিলেন। কিন্তু পরবর্তি কালে তিনি সালমান খানের মত বিপন্ন জানোয়ারদের আর খুন করেননি।
যদিও ময়ূরের পালক ব্যাপারটা একটু গোলমেলে I ওটা বোধ হয়ে নাচতে নাচতে ময়ূরের গা থেকে খসে পড়া পালক হবে, তিনি কুড়িয়ে নিয়েছিলেন I যাই হোক, শিশুটি যতো বড় হতে লাগলো, তত তার জানবার ইচ্ছে বাড়তে লাগলো I
স্যার আপনারাই বলেন জানবার ইচ্ছে না থাকলে শেখা যায় না, জ্ঞান বাড়ে না I তখনকার দিনে ইস্কুলে জীবনবিজ্ঞান পড়ানো হোত না তো! তাই নদীতে গয়লানীদের গোছল করা দেখার ইচ্ছে জাগলো তাঁর! আর জলের মধ্যে পুরোটা দেখা যায়না বলে গয়লানীদের জামাকাপড় লুকিয়ে রেখে চুপি চুপি গাছে চড়ে তাদের চান দেখতে লাগলেন I মানে শুরু থেকেই একটু মেয়ে ঘেঁষা ছিলেন I উঠতি বয়েস তো, এ রকম ইচ্ছে জাগা স্বাভাবিক I
যাই বলুন স্যার, তখনকার দিনের দেবতা বলে পার পেয়ে গেছেন তিনি! আজকের দিনে আমরা অমন ভাবে দেখলে গোয়ালারা এসে “হোয়াইট ওয়াশ” ধোলাই দিত I
মামা কংসের হাত থেকে বাঁচবার জন্যে এই ছেলেটি রাজ বংশ থেকে গোয়ালা বংশে চলে আসায়, ওর এক মামিমাও গোয়ালার বউ হয়ে ওঠেন। সেই মামিমার নাম ছিল শ্রীমতি রাধারাণি ঘোষ, তাঁর সোয়ামীর নাম ছিল শ্রী আইএন ঘোষ I ওই বয়েসে কোনো কোনো ছেলে স্যার মাসিমা, মামিমা, বৌদির সঙ্গে একটু আধটু ইনটু-মিনটুতে জড়িয়ে পড়ে, মানে ওই গোঁফ গজানোর সময়টায়, বুঝতেই পারছেন স্যার I আপনারও তো সে বয়েস একসময় গেছে I সে সব এখানে লেখা যায়না! 


কেননা লিখলেই তো আপনি নম্বর কাটবেন । তবে শুনেছি শ্রীকৃষ্ণর অনেকগুলো বউ ছিল I তখনকার দিনে আইনের বালাই তো ছিল না I যে যত পারত বিয়ে করত। রামচন্দ্রকে দেখুন, একটা বউকে নিয়েই কত ঝামেলা না পোয়াতে হয়েছিল জীবনে, সে জায়গায় শ্রীকৃষ্ণ অতগুলো বউকে ম্যানেজ করেছেন। পরে তিনি সংসারে আগ্রহ হারিয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান । বোধহয় ওদের বায়না মেটানো চাপ হয়ে যাচ্ছিল ।
ট্রেনে যেতে যেতে ভুল করে কুরুক্ষেত্রে নেমে পড়েন। আমাদের কৃষ্ণের গায়ের রঙ কালো ছিল বলে হিরো হতে পারেননি । সেখানে হিরোর ড্রাইভারের রোলটা লুফে নেন! 
শ্রীকৃষ্ণ, যিনি হিরোকে অত জ্ঞান দিলেন আর সেটা আলাদা বই হয়ে বেরুলো কিন্তু শ্রীকৃষ্ণর বদলে গীতা নামে ছাপা হলো কেন জানিনা I কেচ্ছা আর না ঘাঁটাই ভালো আপনার চিত্ত চাঞ্চল্য হবে । একটা কথা :গীতা কি তবে মামিমা রাধার বোন? আর লিখছি না স্যার । বানান ভুল রয়ে যেতে পারে দেখেশুনে নেবেন । নম্বরে কিঞ্চিত দাক্ষিণ্য দেখাবেন এবার পাশ না করলে বাবা ঘর থেকে ঝাঁটাপেটা করে বিদায় দেবেন বলেছেন। বউ বাচ্চা নিয়ে ভালো থাকবেন স্যার!
©️শঙ্খচিল

আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন:

রেটিং ও কমেন্টস জন্য

নতুন প্রকাশিত

হোম
শ্রেণী
লিখুন
প্রোফাইল