আজকে চলো অন্যরকম গল্প কোনো শোনাই তবে
গল্পের স্থান, এই ধরে নাও কাছেপিঠেই কোথাও হবে।
সময়? তা হোক যেমন খুশী, তাতে আবার কি যায় আসে
পুজো গেলো, তাই ধরে নাও দুগগাপুজোর আশেপাশে।
এই সময়টা মনের দেওয়াল একটু বেশী রঙিন থাকে
টুকরো কিছু গল্পকথা সেই সুযোগে ছবি আঁকে।
এ গল্পটার নায়ক ধরো, বয়েস হবে বছর তিরিশ,
বাইরে থাকে, মা বলেছে পুজোর কদিন শহর ফিরিস।
তাই ফিরেছে, ছটফটানো খাঁচার ভেতর বনের পাখি,
প্রতি বছর পুজো এলেই মায়ের এমন ডাকাডাকি।
কিছু লোকে স্বভাবমাফিক একলা থাকে বেজায় ভিড়ে
এই ছেলেটাও অনেকটা তাই, বন্ধুবিহীন একলষেঁড়ে।
স্বভাবতই ভাল্লাগে না হুজুগ খুঁজে ভিড়ভাট্টায়,
সময়মতো রুটিন জেরে মুঠোফোনও অফ হয়ে যায়,
বই পড়ে আর থাকবে কত, মা কে কত সময় দেবে?
অনেকগুলো ঘন্টা মিনিট থাকে পড়ে বিন হিসেবে।
বোর হওয়ারও সীমা আছে, নায়ক হঠাৎ হাঁটতে বেরোয়,
ময়লা ফেলার ডাম্পারে এক কিছু ছেলে খাবার কুড়োয়।
এমন কিছু অভূত না, প্রচুর দেখা এমন আগে,
শহর যখন উপচে সুখে, তখন যেন কেমন লাগে।
নায়কও নয় ব্যতিক্রমী, থমকে গিয়ে পথের মাঝে,
দেখতে থাকে, পথের শিশু পথেই কেমন খাবার খোঁজে।
একটু যেন অপরাধবোধ মনে ঘনায় এসব দিনে
নায়ক ভাবে ওদের দেবে রাস্তা থেকে খাবার কিনে।
ওদের মাঝেই বড় যেটা, নায়ক গিয়ে ডাকলো তাকে,
জবাবে যা শুনলো তাতে অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকে।
‘ ভিখ মাগি না আমরা বাবু, খেটে খুঁজে জোটাই খাবার
আজকে যদি দিচ্ছো কিনে, কালকে কোথায় পাবো আবার? ‘
নায়ক বলে তুতলে গিয়ে, ভিক্ষার দান নাই বা খেলি,
বন্ধুও তো খাওয়ায় কত, তোদের যদি বন্ধু বলি?
‘ বন্ধু মানে দোস্তি? তোমার সাথে সেটা হবে কেমনভাবে?
আচ্ছা তবে পহেলা তুমি হামারে সাথ খাবার খাবে ‘
এমনতর প্রস্তাবে তো ছিটকে পড়ে কাটবে সবাই
নায়ক কিন্তু ছিটকালো না, বসে পড়ে বললো ‘ দে খাই’।
তারপরে কি? এক দঙ্গল ময়লা বাচ্চা আর আমাদের
একলষেঁড়ে,
ওই দেখো না হাঁটছে কেমন পুজোয় আলো রাস্তা জুড়ে।
আর্যতীর্থ
চিত্র সৌজন্য : গুগল