মৃত্যুর মুখে পাড়ি দিল কারা,
জীবনের গান গাইতে?
যেখানেই থাক জেনে গেল তারা,
বাংলা ভাষার চাইতে-
বড়ো কেউ নয়। এই বিশ্বাসে…
একুশে ফেব্রুয়ারী-
দীপ্ত মিছিলে আজন্ম ছুটি।
শপথের তরবারি-
শানিয়ে রেখেছি লক্ষ ভাইয়েরা,
পাশে থাকি সুখে দুখে।
ভাষাদস্যুরা তাজা প্রান নিল,
কান্না জমেছে বুকে!
শাপলা-শালুক, পদ্ম কুঁড়িরা
বাংলার ঘরে ফুটছে,
রফিক-সালাম, প্রিয় জব্বার
বরকত আজও ছুটছে!
কঠিন শমন, রক্তচক্ষু
উপেক্ষা করে লড়ছে,
বাংলার বীর চির দুর্জয়
মা-মাটিতে প্রাণে ধরছে।
গাছপালা ঘেরা শস্য শ্যামলা
নদীমাতৃক এ দেশটা,
দমানো যাবে না, যতই করো না-
প্রাণপণে শত চেষ্টা।
ভাইয়ের রক্তে ভিজেছে স্বদেশ,
ঘাতকের নেই লজ্জা!
মৃত্যু মিছিলে রক্তের নদী
চাইছি যে রণসজ্জা।
দানবের হানা তুচ্ছ করেছি,
উচ্চে তুলেছি মাথা;
আমাদের প্রিয় মাতৃভূমি তো
একুশেরই শোকগাঁথা।
শিমুল-পলাশে আগুন লেগেছে
এই ফাল্গুন মাসে,
নতুন সূর্য হৃদয়ে এঁকেছি-
পৃথিবীর ইতিহাসে।
রবীন্দ্রনাথ, জীবনানন্দ-
নজরুলের এ পাঠশালা,
বুকের ভেতর আমরা লিখেছি
অমর পঙক্তিমালা!
তোমাকে আমরা ভুলতে পারিনি,
শহিদের স্মৃতি মাখা।
মৃত্যু ভয়কে তুচ্ছ করা সে
একুশের পাশে থাকা-
আমারও মহান দায় এসে যায়।
দু’চোখে স্বপ্নরাশি,
কণ্ঠে আমার সোনার বাংলা;
তোমাকেই ভালবাসি।
আকাশে-বাতাসে, সাতশো নদীতে
ছুটেছে মুক্তিসেনা,
যে স্বদেশ এই যুদ্ধে পেয়েছি
রক্ত দিয়ে তা কেনা!
তিরিশ লক্ষ প্রাণের মূল্য
কি দিয়ে শুধব ঋণ?
একাত্তরের ডিসেম্বরের
ষোলই সে শুভদিন।
আমরা পেয়েছি বিজয় দিবস
এ জাতির বীরগাঁথা,
প্রতিজ্ঞা করি কখনোই যেন
নত করব না মাথা।
সগর্বে ওড়ে স্বাধীন পতাকা
আকাশে বাতাসে ঝড়,
মাথা উঁচু করে বাঁচতে শেখান
বাংলার মুজিবর।