ব্যাংকার

গার্গী সরকার
5 রেটিং
2328 পাঠক
রেটিং দিন
[মোট : 2 , গড়ে : 5]

পাঠকদের পছন্দ

ব্যাংকিং একটা এমন শব্দ যেটার সাথে এখন সব শ্রেণীর এবং সব বয়সের লোকেরা যুক্ত | আগে ব্যাংকে শুধু ব্যাবসায়ী শ্রেণীর লোক বা ধনী লোকেরা প্রবেশ করতো কিন্তু এখন প্রত্যেকটি মানুষ ব্যাংকের সাথে যুক্ত |তবে ব্যাঙ্ক নিয়ে কারো সাথে কোনো কথা হলেই বোঝা যায় যে এই সংস্থা নিয়ে সবারই অনেক অভিযোগ রয়েছে | কেউ বলে ব্যাংকে গেলে সারাদিন কেটে যায় তবু কাজ হয়না , আবার কেউ বলে ব্যাংকের লোকেরা একদম কাজ করে না, কেউ আবার বলে ব্যাংক থেকে লোন পেতে গেলে অনেক কাঠখড় পোড়াতে হয় | এই সব কথাগুলো ঠিক কিন্তু আমরা সবাই নিজেদের দিকটা ভেবে কথাগুলো বলি কিন্তু উল্টো দিকের মানুষটার দিকে কখনো তাকাই কি ? ব্যাংকে গিয়ে প্রচুর গিজগিজে ভিড় দেখে আমরা বিরক্ত হই কিন্তু শুধু মাত্র একটা ক্যাশ কাউন্টারে  সেই সকাল ১০টা থেকে ৪টা অবধি টানা একটা মানুষ হাত চালিয়ে যাচ্ছে এটা লক্ষ্য করিনা| অনেকে হয়তো বলবে এটা তার কাজ এটার জন্য সে মাইনে পাচ্ছে | এটা ঠিক যে একটা ব্যাংকের এমপ্লয়ী গ্রাহকদের পরিষেবা দেওয়ার জন্য মাইনে পায় কিন্তু পরিষেবার বাইরেও তাকে অনেক কিছু   দিতে হয়| ব্যাংকে দিন  দিন কর্মী সংকটের কারণে অনেক এমপ্লয়ী এক হাতে হাজার কাজ করতে করতে সারাদিনে  হয়তো একটু জল পর্যন্ত খাওয়ার  সময় পায় না  | চা টা টেবিল দফতরি দিয়ে যায় কিন্তু সেটা সেরকমই পড়ে থাকে চুমুক দেওয়া আর  হয়না | প্রত্যেকটা সংস্থার ডে অফ  থাকে একমাত্র দুটো শ্রেণীর মানুষের ডে অফ থাকে না এক হচ্ছে আর্মি যারা বর্ডারে থাকে আর অন্যটা হচ্ছে ব্যাংকের যারা সোম থেকে শনি ডিউটি দেয় তরপর রোববার এন.পি.এর কালেকশন এর জন্য রাস্তায় রাস্তায় ঘোরে|  প্রত্যেকটা সংস্থার একটা অফিস আওয়ার থাকে কিন্তু ব্যাংকের কোনো ফিক্সড আওয়ার নেই, ব্যাংক খোলার টাইম বাধা কিন্তু ব্যাংক এমপ্লয়ীরা যতক্ষণ  না ক্যাশ মেলাতে পারবে বা  সার্ভার ডেএন্ড(dayend) করতে পারবে ততক্ষন তাদের ছুটি নেই| তার মানে এটা দাঁড়ালো যে লিংক ফেইলিয়র এর জন্য কখনো  যদি ডে এন্ড না হয় তাহলে  ব্যাংকারদের অনির্দিষ্টকালের জন্য ব্যাংকে বসে থাকতে হবে এবং ক্যাশ যদি ক্যাশিয়ারের কম হয় তাহলে নিজেদের পকেট  থেকে দিয়ে তারপর বাড়ি যাবে| একজন  ব্যাংকারকে ১০০ জন মানুষ ১০০ রকম  বিভিন্ন সমস্যা  নিয়ে  তার চেয়ার ঘিরে দাঁড়িয়ে থাকে| একজনের  সাথে যখন সে একটা সমস্যা নিয়ে কাজ করে তখন চার পাশ থেকে জন লোক আরো ৫টা আলাদা আলাদা প্রশ্ন করে যায় | একটা মানুষ কি একসাথে টা লোকের রকম প্রশ্নের উত্তর দিতে পারে? আর এই অবস্থা প্রতিনিয়ত চলতে থাকে অবসর না নেওয়া অবধি | মাইনে দিলেও কি কোনো মানুষের কাছ থেকে এরকম সার্ভিস ডিমান্ড করা যায়?তার ওপর আবার আমাদের দেশের ন্যাশনালাইজড ব্যাংকের মেশিনপত্রের কোনো জবাব নেই , অর্ধেক এর বেশি অকেজো হয়ে গ্যাছে কিন্তু সেগুলো পাল্টানোর টাকা ব্যাংকের কাছে নেই কারণ এন. পি. এ-এর জন্য ব্যাংক লসে রান করছে | অনেকেই বলবে এরকম লোন ব্যাংক দেয় কেন? তাহলে একটা কথা বলি সব সময় সব কিছু মানুষ দিতে চায় না কিন্তু দিতে হয় কারণ সেই মানুষটার ওপর অনেক চাপ থাকে, ব্যাংকারদের ঠিক এরকমই  অবস্থা লোন যদি দেয় তাহলে এন. পি. এ. -এর বোঝা আবার যদি না দেয় তাহলে ম্যানেজমেন্ট থেকে ট্রান্সফারের হুমকি, কারণ রাজনৈতিক চাপ | এই অবস্থায়  দাঁড়ায় একজন ব্যাংকারের জীবন তা আমরা কেউ আন্দাজ করতে পারি না | খবরের কাগজে অনেক সময় শোনা যায় যে ব্যাংকের ম্যানেজার আত্মহত্যা করেছে কাজের চাপে| এত কিছুর  পরও কিছু পাল্টায়না কারণ সব জায়গায় পরিবর্তন আসে কিন্তু একজন ব্যাংকারের জীবনের কোনো পরিবর্তন আসেনা|                    

আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন:

রেটিং ও কমেন্টস জন্য

নতুন প্রকাশিত

হোম
শ্রেণী
লিখুন
প্রোফাইল