আমার স্বাধীনতার দিন

সর্ভানু মন্ডল
0 রেটিং
416 পাঠক
রেটিং দিন
[মোট : 0 , গড়ে : 0]

পাঠকদের পছন্দ

আরও একটি স্বাধীনতা দিবসের সময় আসন্ন। ভারতবাসীর সবচেয়ে গর্বের দিন। ছোটবেলায় ওই দিনটাতে স্কুলে কী মজাই না করতাম। কিন্তু বড়ো হয়ে যাবার সাথে সাথে স্বাধীনতা দিবস নামক গর্বের দিনটি শুধু ক‍্যালেণ্ডারেই লাল কালিতে উজ্জ্বল হয়ে রয়ে গিয়েছে, কারণ তাতে আনন্দ উপভোগের বিন্দুমাত্র লেশ ছিল না।আজও মনে পড়ে ছোটবেলায় স্বাধীনতা দিবসের দিনে কত ভোরেই না উঠতাম আমরা। ফুল তুলে মালা গেঁথে আমরা সেদিন দেশনায়কদের অর্ঘ‍্য দিতে রীতিমতো excited থাকতাম। কার ফুলের মালাটা দেশনায়কদের ছবিতে সবচেয়ে ভাল মানাচ্ছে সেটা নিয়ে রীতিমতো competition চলত। এই competition এ কয়েকবার সফল হয়েছিলাম আবার কয়েকবার পরাজিতও হয়েছিলাম।কিন্তু তাতে উৎসাহের এতটুকু ভাঁটা পড়েনি। একসাথে মেতে ওঠাতেই ছিল সকল অনন্দ। আর সবশেষে ছিল Sir, Madam দের impress করে পাত্রে পড়ে থাকা প্রয়োজনের বাড়তি মিষ্টি গুলো মুখে পুরে নির্লজ্জের মতো বন্ধুদের দিকে হাসতে থাকার মুহূর্ত। এটাতে আমি ছিলাম সিদ্ধহস্ত। স্বাধীনতা দিবসের ঠিক আগের দিন রাত্রে পুরানো কথা গুলো ভাবতে ভাবতে আমি ঘুমিয়ে পড়লাম। পরদিন ঘুম ভাঙল মায়ের বকুনিতে। আজ আমি সমাজে একজন প্রতিষ্ঠিত ডাক্তার কিন্তু মা যেন বকুনি না দিলে চেনা মা টাকে আমি খুব miss করি। যাই হোক স্নান,খাওয়া শেরে আমি তৈরি হলাম Hospital এ যাবার জন‍্য। এই মহামারি করোনার সময় নিজের ছেলেকে Hospital নামক যুদ্ধক্ষেত্রে পাঠিয়ে যে কোনো মা ই স্বস্তিতে থাকেন না সেটা যাবার সময় মায়ের মুখ দেখেই স্পষ্ট বুঝতে পারলাম। এই মহামারিতে মানুষকে বাঁচিয়ে করোনাকে যোগ‍্য জবাব দিতে প্রাণপন চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছিলাম আমরা। হয়ত পুরোপুরি সফল হতে পারিনি কিন্তু চেষ্টার কোনো খামতি রাখিনি। আজ 15 August,এখন সময় সকাল 11 টা। আমরা Hospital এর ডাক্তার, নার্সরা লাইন দিয়ে দাঁড়িয়ে হাততালি দিচ্ছি আর এক এক করে Covid 19 বিজয়ী রোগীরা বেরিয়ে আসছেন তাদের স্বাধীন জীবনের মূল স্রোতে ফিরে আসার জন‍্য। আজ স্বাধীনতা দিবসের দিন হয়ত ছোটবেলার মতো দেশনায়ক দের ছবিতে মালা দিয়ে শ্রদ্ধা জানাতে পারিনি কিন্তু ওনাদের শিখিয়ে যাওয়া রণাঙ্গনের রাস্তা ধরে মানুষ দের স্বাধীন জীবনের মূল স্রোতে ফিরিয়ে দিতে তো পারছি। যে লোকগুলো এখনও ওনাদের Family র Earning member. ওনাদের বাঁচিয়ে ওদের পরিবারকে তো ভবিষ্যতের স্বাধীনতার রাস্তাকে সুগম করতে পেরেছি। এটাই বা কম কিসের।সকালে আসার সময় আকাশটা একটু মেঘলা ছিল। কিন্তু এখন সমস্ত মেঘ সরে গিয়েছে। Hospital campus এ সকালে উত্তোলিত জাতীয় পতাকার নিচ দিয়ে একদল জীবন যুদ্ধে জয়ী মানুষ স্বাধীন জীবনের ব্রতী হয়ে এগিয়ে চলেছে। সূর্যের আলোয় জাতীয় পতাকার তিনটি রঙ প্রকাশমান হয়ে স্বমহিমায় উড়ে চলেছে। আজকের এই সাফল‍্যই আমার কাছে প্রকৃত স্বাধীনতা। তাই আজ সমাজের রক্তচক্ষুকে উপেক্ষা করে জাতীয় পতাকার দিকে মাথা তুলে সগর্বে বলতে পারি  “জয় হিন্দ” 

আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন:

রেটিং ও কমেন্টস জন্য

নতুন প্রকাশিত

হোম
শ্রেণী
লিখুন
প্রোফাইল