একটুকরো অন্য দীপাবলি

প্রোজ্জ্বল বন্দোপাধ্যায়
3.3 রেটিং
1399 পাঠক
রেটিং দিন
[মোট : 4 , গড়ে : 3.3]

পাঠকদের পছন্দ

জানালা দিয়ে দূরে তাকিয়ে ছিলেন গুরু হরগোবিন্দ। একটু একটু করে মেঘের দল গ্রাস করে ফেলছে পুরো আকাশটাকে। ঠান্ডা হাওয়া বইছে চারপাশে। চমৎকার পরিবেশ। আনমনা হয়ে যান সর্বজন শ্রদ্ধেয় এই শিখ গুরু। আরো একটা দীপাবলি যে এসেই গেল!
আর কি কোনদিন ফেরা হবে অমৃতসরে? অসময়ের বৃষ্টিতে রাভি নদীর দুপাশ কিভাবে হঠাৎ করে সবুজ হয়ে যায় এ জীবনে কি তা আর দেখার সৌভাগ্য হবে?


গুরু হরগোবিন্দ

পাঞ্জাবের হিন্দু জনগণের দেওয়ালি উদযাপনে আর কি কোনদিন যেতে পারবেন গুরুজি? প্রিয় পাঞ্জাব কি তাঁকে আর দেখতে পাবে কোনোদিন? নাকি এই বিদেশ বিভুঁই এই জীবন শেষ করতে হবে? তাঁর পিতার মত? দেশকে একবার দেখার জন্য আকুল হয়ে উঠেছে তাঁর মন। 
কিছু একটা ছিল বটে তাঁর পিতার মধ্যে। পঞ্চম শিখ গুরু অর্জন দেব, যাঁর নাম উচ্চারন হলেই আপামর পাঞ্জাবি জনসাধারণের মাথা এমনিই শ্রদ্ধায় নিচু হয়ে যায়। আজ যেভাবে হরগোবিন্দকে বন্দী করে রেখেছেন মুঘল সম্রাট জাহাঙ্গীর, সেভাবেই একদিন অর্জনকেও রেখেছিলেন। আদেশ করেছিলেন ধর্মান্তরিত হতে, জীবনের বিনিময়ে ও যা করার কথা মাথা তেই আনেননি অর্জন। ফলস্বরূপ নিষ্ঠুর হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়ে পাঞ্জাবকে রিক্ত করে দিয়ে চলে যান অর্জন, কিন্তু এক মুহূর্তের জন্যও মাথা নিচু হতে দেননি প্রিয় রাজ্যের। করেননি আপস। 
তাঁর ভাগ্যেও কি একই পরিণতি? ভাবছেন হরগোবিন্দ।
জাহাঙ্গীর অবশ্য তাঁকে ধর্ম সংক্রান্ত কোনও কথাই বলেননি। তাঁর বিরুদ্ধে মুঘলদের অভিযোগ অন্য। পিতার মৃত্যুর পর যখন সংগঠনের হাল ধরেন তিনি, চেষ্টা করেছিলেন শিখ জাতিকে একটি সামরিক জাতি হিসেবে গড়ে তুলতে। একের পর এক শিখ গুরু মুঘল দের হাতে অত্যাচারিত হবার পর তিনি উপলব্ধি করতে পেরেছিলেন যে, দিল্লির নাকের ডগায় একটি শক্তিশালী রাজ্য গড়তে গেলে মুঘলদের মুখোমুখি হতেই হবে।


জাহাঙ্গীর

জাহাঙ্গীর মোটেই তাঁর পিতা সম্রাট আকবরের মত উদার নন। যে আকবর অমৃতসরের স্বর্ণমন্দির নির্মাণের জন্য অক্লেশে জমিদান করে দিয়েছিলেন, তাঁরই পুত্র জাহাঙ্গীর নির্দ্বিধায় হত্যাই করে বসলেন গুরু অর্জনকে। তাই তো একটি শক্তিশালী শিখ সামরিক বাহিনী গড়তে উদ্যোগী হন হরগোবিন্দ। বিভিন্ন নিয়নকানুন প্রয়োগ করে, বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিয়ে, প্রকৃত নেতার মতই রাজ্যের প্রতিটি প্রান্ত ঘুরে বেড়িয়ে সে কাজ বহুলাংশেই সম্পন্ন করে ফেলেছিলেন তিনি। এসব কি আর জাহাঙ্গীরের সহ্য হবার কথা? ফলস্বরূপ, হরগোবিন্দের সাথে মুঘলদের সংঘর্ষ, তাঁর গ্রেপ্তারি এবং ঘর থেকে অনেক দূরে মধ্য ভারতের গোয়ালিয়র দুর্গে বন্দী জীবন। শুধু তো তিনি নন, মুঘলদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানো সারা দেশের বাহান্নজন জনপ্রিয় রাজাকেও বন্দি করেছেন জাহাঙ্গীর। গোয়ালিয়র দুর্গ আজ তাই পরাজিত নৃপতিদের বন্দীশালা। বহুদিন ধরেই তাঁরা কারারুদ্ধ।
ছবির পর ছবি ভিড় করছে হরগোবিন্দের মনে। আর বুঝি ফেরা হল না কোনোদিন নিজভূমে। যে পরিণতিই অপেক্ষা করে থাকুক, মাথানত করবেন না তিনি। চোয়াল শক্ত হয়ে গেল তাঁর। 
আচমকা কক্ষের সামনে পায়ের আওয়াজ। পিছন ফিরে তাকালেন তিনি। দরজা খুলে গেল। সামনে এসে দাঁড়াল প্রহরী। 
“আসুন, আপনাকে হুজুর ওয়াজির শাহ ডেকেছেন।”
তরুণ শিখ গুরু আগেই শুনেছিলেন এই ওয়াজিরের নাম। সম্রাটের বিশ্বস্ত সহচরদের মধ্যে প্রথম সারিতেই নাকি পড়েন উনি। 
“তিনি এসেছেন নাকি এখানে? তিনি তো আগ্রায় থাকেন?”
“হ্যাঁ, এইমাত্র এসেছেন। আর আপনাকে তলব করেছেন।”
কথা না বাড়িয়ে প্রহরীর সঙ্গে চলতে লাগলেন হরগোবিন্দ। বিশাল এই গোয়ালীয়র দুর্গ। অন্যান্য মুঘল দুর্গের মতই। তিনি কক্ষের বাইরে বেরোনোর পরেই প্রহরীদের একটি দল তাঁকে ঘিরে রেখে সামনে নিয়ে যাচ্ছে। হাজির করা হল বিশাল দরবার কক্ষে। সামনে নিজের আসনে উপবিষ্ট ওয়াজির শাহ। 
” কেমন আছ, হরগোবিন্দ?”


গোয়ালীয়র দুর্গ


রাগে গা জ্বলে উঠল তরুণ ধর্মীয় নেতার। বন্দি করে রেখে কুশল জিজ্ঞাসা? তবু স্বভাবসিদ্ধ ভদ্রতার বশেই রাগ চেপে রেখে উত্তর দিলেন,”আপনারা যেমন রেখেছেন!”
হো হো করে হেসে উঠলেন ওয়াজির। “নাহ, তোমাদের রসবোধ আছে মানতেই হবে। তোমার পিতারও ছিল। যাক গে শোনো, তোমাকে বলা দরকার কেন এখানে হঠাৎ এলাম। এলাম তোমার মুক্তির ফরমান নিয়ে।”
নিজের কানকে বিশ্বাস করতে পারলেন না হরগোবিন্দ। মুক্তি? জাহাঙ্গীর তাঁকে মুক্তি দিয়েছেন? আবার ফেরা যাবে অমৃতসরে? আবেগের বিস্ফোরন সামলে নিলেন তিনি। মার্জিত কণ্ঠে বললেন,”যদি তাই হয় তাহলে আমার পরম সৌভাগ্য। সম্রাটকে অনেক ধন্যবাদ।”
” মুঘল রাজপরিবারের ঐতিহ্য মেনেই দীপাবলি উপলক্ষ্যে আমি তোমাকে মুক্তি দিতে এসেছি। সম্রাট আকবরের ঐতিহ্য মেনেই মহান বাদশাহ জাহাঙ্গীর বরাবরই সকল ধর্মের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই, এই বিশেষ দিনে আমরা তোমার মুক্তির ব্যবস্থা করছি। দীপাবলির আগেই তোমাকে মুক্তি দেওয়া হবে।”
ধন্দে পড়ে গেলেন হরগোবিন্দ। সম্রাট আকবর যদি এই কথাগুলি বলতেন, তিনি অবাক হতেন না। কিন্তু যে জাহাঙ্গীর শুধুমাত্র ভিন্ন ধর্মাবলম্বী হবার অপরাধে তাঁর পিতাকে হত্যা করেছিলেন, তিনি হঠাৎ এরকম উদার হয়ে গেলেন কি করে? নাকি এও একধরনের রাজনৈতিক চাল? এবং দীপাবলি তো সরাসরি শিখ উৎসব নয়। হিন্দু জনগণের সাথে মিশে দিনটিতে শিখেরা আনন্দ করে ঠিকই, কিন্তু তাঁদের নিজস্ব ধর্মীয় কোনও তাৎপর্য বহন করে না এই দিনটি। সম্রাট জাহাঙ্গীর তা জানেন না এ হতেই পারে না। হঠাৎ হরগোবিন্দের মনে পড়ল তাঁর সহবন্দি ৫২ জন হিন্দু রাজার কথা। 
“ধন্যবাদ। কিন্তু আমার সঙ্গে আরও ৫২জন রাজা বন্দী আছেন। তাঁরা প্রত্যেকেই হিন্দু ধর্মাবলম্বী। দীপাবলি তাঁদেরই উৎসব। তাঁদের আপনি মুক্তি দিচ্ছেন তো?”
কৌতুকের চোখে তাকালেন ওয়াজির। 
“তোমার নজর তো সর্বত্রই দেখছি, হরগোবিন্দ! নাহ, ওদের নিয়ে আমরা এখনই কিছু ভাবিনি। তবে, তুমি যদি ওদের মুক্ত করতে চাও, তাহলে সে ব্যবস্থা তোমাকেই করতে হবে।”
গম্ভীর হয়ে গেলেন হরগোবিন্দ। বুঝে ফেলেছেন তিনি জাহাঙ্গীরের চাল। কেবল হরগোবিন্দকে মুক্তি দিয়ে তিনি মুঘল বিরোধী আন্দোলনে বিভেদ সৃষ্টি করতে চাইছেন। অভিজ্ঞ এই শিখ গুরু জানেন, কেবলমাত্র তিনি মুক্তি পেলে অন্যান্য মুঘল বিরোধী শাসকেরা তাঁকে মুঘলের গুপ্তচর ভেবে বসতেই পারেন। অবিশ্বাসের বাতাবরণ সৃষ্টি হবে তাঁদের মধ্যে। ভবিষ্যতে মুঘল যখন পুনরায় পাঞ্জাব আক্রমণ করবে, কারোরই সাহায্য পাবেন না তিনি। বিভেদ সৃষ্টি করে পুরো দেশ গ্রাস করতে চান জাহাঙ্গীর। হরগোবিন্দ হয়ে উঠবেন সেই বিভেদ সৃষ্টির হাতিয়ার। মন শক্ত করলেন তিনি। মুঘল বিরোধী ঐক্যে ফাটল তিনি ধরতে দেবেন না কিছুতেই। ” কি ব্যবস্থা বলুন?”, জিজ্ঞাসা করলেন তিনি। 
“যদি ওই বাহান্ন জন রাজা তোমার পোশাক স্পর্শ করে বেরোতে পারে, তবেই তারা তোমার সাথেই মুক্তি পাবে। নচেৎ নয়।”
স্তম্ভিত হয়ে গেলেন হরগোবিন্দ।  ৫২ জন একসাথে তাঁর পোশাক স্পর্শ করবেন কিভাবে? এ তো অসম্ভব। পাঁচ দশ জন হলে তাও না হয় কথা ছিল। কিন্তু ৫২ জনকে একসাথে তাঁর পোশাক স্পর্শরত অবস্থায় নিয়ে পথ চলা তো প্রায় অবিশ্বাস্য। 
কিন্তু কঠিন হলেও এটাই হয়ত চূড়ান্ত সুযোগ। তিনি এই সুযোগ নাকচ করতে চাইলেন না। রাজি হয়ে ওয়াজির কে ধন্যবাদ জানিয়ে ফিরে এলেন তিনি। সম্রাট তাঁর সাথে ধূর্ত খেলা খেলছেন, কিন্তু তিনিও প্রমাণ করে দেবেন যে, রাজনীতিটা কারোর থেকেই কম তিনি বোঝেন না।


নিজ কক্ষে ফিরে এসে ভাবতে লাগলেন হরগোবিন্দ। সমস্যা যখন আছে, তার সমাধানের উপায়ও নিশ্চয়ই আছে। তবে তিনি দৃঢ়সংকল্প, কোনও অবস্থাতেই একা মুক্তি নেবেন না। জীবন যখন তাঁকে একটা সুযোগ দিয়েছে, তার পূর্ণ সদ্ব্যবহার করবেন তিনি। ভাবতে লাগলেন তিনি, জাহাঙ্গীরের শর্তটি। পোশাক স্পর্শ করে বেরোতে হবে বাকি বাহান্ন জন রাজাকে। এই পোশাকেই লুকিয়ে আছে মুক্তির চাবিকাঠি। ভাবতে লাগলেন তরুণ এই নেতা। 
ভাবতে ভাবতে হঠাৎই মাথায় বিদ্যুৎ খেলে গেল তাঁর। জাহাঙ্গীর পোশাকের কথা বলে পাঠিয়েছেন ঠিকই, কিন্তু কোনও বিশেষ পোশাকের শর্ত তো চাপান নি। যে কোনও পোশাক হলেই তো হল। হোক না সে কোনও কিম্ভূতকিমাকার পোশাক। আসল উদ্দেশ্য তো মুক্তি। 
চোখ চকচক করে উঠল হরগোবিন্দের। কাজে লেগে গেলেন তিনি। বিশেষ পোশাকটি বানাতে সময় লাগবে। সেই সময়টুকু নেওয়া প্রয়োজন। তাড়াহুড়ো করে এই সূক্ষ্ম কাজ সম্ভব নয়। তিনি জানতেন যে মুঘলরা কথার খেলাপ করবে না। বাদশাহী ফরমানের মর্যাদা মুঘলরা রক্ষা করে চলে। অতএব, বিশেষ এই পোশাকটি বানিয়ে ফেলতে পারলেই মিলবে মুক্তি। ভাবতেই কাজের গতি বেড়ে গেল তাঁর। 
অবশেষে এল ১৬১৯ খ্রিস্টাব্দের সেই দিন। দীপাবলির কিছুদিন পূর্বে। মুঘল কর্তৃপক্ষ সবিস্ময়ে লক্ষ্য করলেন যে, হরগোবিন্দ তাঁর সঙ্গী বাহান্ন জন নৃপতি সহ বেরোনোর জন্য তৈরি। তাঁর পরনে বিশেষ এক পোশাক। কিন্তু, এ কেমন পোশাক? চক্ষু চড়কগাছ হয়ে গেল মুঘল কর্মচারীদের। এমন অদ্ভুত পোশাক তো কোনোদিন দেখেছেন বলে তাঁদের মনে পড়ল না!


আদতে পোশাকটি একটি ঢিলেঢালা জোব্বা ব্যতীত আর কিছুই নয়। কিন্তু অবাক হবার মত বিষয় হল, পোশাকটির যেখান সেখান দিয়ে বেরিয়ে আছে প্রচুর লম্বা সুতো, যা দেখতে লাগছে অবিকল লেজের মত। এবং বাহান্ন জন নৃপতি সেই সুতোগুলি হাতে নিয়ে হরগোবিন্দের পাশে দন্ডায়মান। প্রাথমিক বিস্ময় কাটিয়ে মুঘল কর্তৃপক্ষ বুঝলেন যে, বুদ্ধিমান হরগোবিন্দ জাহাঙ্গীরের দেওয়া শর্তটি নিজের এবং নিজেদের লাভেই কাজে লাগিয়ে দিয়েছেন। কোনও নির্দিষ্ট পোশাকের উল্লেখ না থাকায় বাহান্ন টি লেজ বা সুতো সমন্বিত এই বেনজির পোশাকটি বানিয়েছেন তিনি কেবলমাত্র জাহাঙ্গীরের শর্তাবলীর সফল প্রয়োগের জন্যই। অর্থাৎ, শর্তটি হুবহু অনুসরন করে এমন ব্যবস্থা করতে পেরেছেন তিনি, যাতে বাহান্নজন রাজাই তাঁর পোশাক স্পর্শ করে থাকতে পারেন। মুঘলদের সামনে তাঁদের সবাইকে মুক্ত করে দেওয়া বাদে আর কিছুই করার ছিল না। হরগোবিন্দ সসম্মানে মুক্ত হলেন। বুদ্ধির কাছে পরাজিত হল ক্ষমতা। 


(ইতিহাসেরভাষ্য:-
ওয়াজির শাহের মাধ্যমে দিল্লিতে এই খবর পৌঁছলে জাহাঙ্গীর হরগোবিন্দের বুদ্ধিমত্তার তারিফ করেছিলেন এবং সসম্মানে তাঁকে দিল্লির দরবারে সংবর্ধনা দিয়েছিলেন। নিজের রাজত্বের দ্বিতীয় ভাগে জাহাঙ্গীর অনেক উদার ছিলেন। এও শোনা যায় যে, আকবরের আদর্শের প্রভাব তাঁর উপরেও পড়েছিল, দেরিতে হলেও। অনেকে মনে করেন যে, গুরু অর্জন দেবকে বিনা কারণেই হত্যা করে জাহাঙ্গীর অপরাধবোধে ভুগতে থাকেন, তাই অর্জনপুত্র হরগোবিন্দকে সম্মান জানিয়ে নিজের ভাবমূর্তি উদ্ধারের চেষ্টা করেছিলেন। যে কোনও কারণেই হোক, হরগোবিন্দের আমলে আর কখনোই শিখ সম্প্রদায় মুঘলদের দ্বারা আক্রান্ত হয় নি। 

——————————————————————————————————————
           এই বিশেষ দিনটিকে ‘ বন্দী ছোড় দিবস ‘ হিসেবে বর্তমানে শিখ সম্প্রদায়ের মানুষ পালন করেন। ১৬১৯ খ্রিষ্টাব্দে দীপাবলির কিছুদিন আগেই মুক্তি পেলেও দিল্লিতে মুঘলদের হাতে সংবর্ধিত হবার পর দীপাবলির দিনই হরগোবিন্দ পুনরায় অমৃতসরে পা রাখেন। শিখ রাজ্য জুড়ে উৎসব শুরু হয়। হিন্দু সম্প্রদায়ের মতই শিখেরাও আলোক প্রজ্জ্বলনের দ্বারা দিনটিকে পালন করেন। সেই থেকে শুরু হয় পাঞ্জাবে শিখ সম্প্রদায়ের দীপাবলি উদযাপন। তবে শিখ সম্প্রদায়ের মানুষেরা হিন্দুদের মত দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে এই দিনটি পালন করেন না। তাঁদের কাছে এটি ‘ বন্দী ছোড় দিবস ‘, যে দিনে তাঁদের শ্রদ্ধেয় ষষ্ঠ গুরু হরগোবিন্দের বুদ্ধিমত্তার কারণে বাহান্ন জন নিরপরাধ মানুষ মুক্তি পায়। গোয়ালিয়র দুর্গ সংলগ্ন যে স্থানে গুরু হরগোবিন্দ বন্দী ছিলেন, সেখানে শিখরা স্থাপন করেছেন  ‘গুরুদ্বারা বন্দী ছোড় ‘। এই দিনটিতে শিখরা গুরুদ্বারায় গিয়ে গুরুকে স্মরণ করেন, প্রদীপ জ্বালান, দান ধ্যান করেন ইত্যাদি। সারা দেশের দীপাবলি উৎসবের সাথে এভাবেই মিশে যায় পাঞ্জাবের ‘ বন্দী ছোড় দিবস ‘ উদযাপন। )

চিত্র সৌজন্য : গুগল

আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন:

রেটিং ও কমেন্টস জন্য

নতুন প্রকাশিত

হোম
শ্রেণী
লিখুন
প্রোফাইল